লেখক :মুহম্মদ নিজাম
আমরা একটা বন্ধ গেটের কাছে স্টাক হয়ে আছি। কয়েকটা পুলিশ বারুদভরা শটগান উঁচিয়ে শিকারি ভঙ্গিতে শরীরটা বাঁকিয়ে মাথা নিচু করে হেঁটে হেঁটে আমাদের দিকে আসছে। ট্রিগারে আঙুল। সাবধানী পা।
মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আমরা গোটা কয়েক মানুষ একটা গলির ভেতর আটকে গেছি। পেছনে আর পথ নেই। সবগুলো বাড়ির কেচিগেট লাগানো। আমাদের মধ্য থেকেই একটা অল্পবয়সী ছেলে বন্ধ গেটের রডগুলি ধরে ঝাঁকাচ্ছে আর আকুল স্বরে মিনতি জানাচ্ছে,
“গেট খুলে দিন, আল্লাহর ওয়াস্তে গেইটটা খুলে দিন! মেরে ফেলবে ওরা আমাদের! হ্যালো, কেউ আছেন?”
পুলিশের দলটা একেবারে দশ গজের মধ্যে চলে এসেছে, ফায়ার করতে যাবে ঠিক তখনই, একদম সামনের পুলিশটা অস্ত্র নামিয়ে মুখের হেলমেট চোখের উপরে তুলে কড়া গলায় শাসনের সুরে ডাক দিলো, “তিতাস! তুই এখানে কেন?”
যেন একটা দম-বন্ধ-করা ঘোলাজলের স্রোতের ভেতরে ডুবে যেতে যেতে আচমকা ডাঙায় উঠে এলাম, “ভাই তুই!”
ভাই এগিয়ে এসে আমার কানের উপর কষে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল, “যা ভাগ!”
আমার পাশে আটকে থাকা অন্য মানুষগুলির দিকে তাকিয়েও ভাই একই কথা বলল, “যান যান, বাড়ি যান সবাই।”
হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। অমোঘ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরার পথ পেলাম। ভাই নিজেও তার দলবল নিয়ে গাড়ির দিকে চলে গেলো। তীব্র সাইরেন বাজাতে বাজাতে ওদের আর্মড কারটা রণক্ষেত্র ছেড়ে দূরের পথে মিলিয়ে গেলো।
কিন্তু না, এই গল্প সত্য নয়। সত্য এসেছি আরও বিকট রূপ নিয়ে। আরও শ্বাপদ রূপ নিয়ে। সেই গল্পই বলবো আজ।
Sorry, the comment form is closed at this time.