লেখক : তাহেরা আখতার চৌধুরী
প্রকাশনী : মেঘদূত প্রকাশন
পৃষ্ঠা : ৮০
সংস্করণ : ১ম প্রকাশ, ২০২৫
আইএসবিএন : ৯৭৮৯৮৪৯৯৭৭৮৪১
ভাষা : বাংলা
রক্তাক্ত জুলাইয়ের বীরগাথা
পরম করুণাময় আল্লাহ রব্বুল আলামীনের অসীম কৃ পায় প্রকাশিত হতে
যাচ্ছে তাহেরা আখতার চৌধুরীর তৃ তীয় গল্পগ্রন্থ ‘রক্তাক্ত জুলাইয়ের
বীরগাথা’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা বিরোধী
শাহাবাগ কেন্দ্রিক বিক্ষোভ কর্মসূচি এক সময়ে রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে
এবং স্বৈরাচার সরকার বিদায়ের ১ দফা ১ দাবির উত্তাল জনস্রোতে। এই
সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে শিশু, কিশোর, মধ্যবয়েসী, বৃদ্ধ তথা
আবালবৃদ্ধবনিতা। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সাধারণ জনগন দেখেছে
অধিকার আদায়ে দৃপ্ত শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি, পুলিশ কর্ত ৃ ক
আন্দোলনকারীদের ব্যাপক ধরপাকড়, হেলমেটবাহিনী কর্ত ৃ ক নির্বিচার
বর্বর হামলা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি
আন্দোলনকারীদের উপর ফের নৃশংস হামলা, সারা দেশে ইন্টারনেট
ব্লকআউট, ১৪৪ ধারা জারি করে কার্ফিউ, কালরাত্রির অমানিশা,
সহস্রাধিক আন্দোলনকারীর রক্তের স্রোত, শতাধিক শহীদের মৃত্যু
উপত্যকা- যা আমাদের স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশে ঘটবার কথা ছিলো
না। ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট ছিল প্রকৃত অর্থেই রক্তাক্ত।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়টা ঠিক এমনই ছিল। ২৫ মার্চ
কালরাত্রিতে ঘুমন্ত ঢাকা শহরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অতর্কিত
আμমণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। সুদীর্ঘ
নয় মাসের টান টান উত্তেজনা, উদ্বেগ, আতঙ্ক, বিশ্বাস, অবিশ্বাস আর
বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ সময় পার হয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে
এবং অগনিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা।
ভূ মি কা
আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি এই কারণে যে, ১৯৭১ এবং
২০২৪ এর দুইটা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সাক্ষী আমি। পার্থক্যটা এই যে,
১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম বহিঃশত্রু তথা পাকিস্তানী
হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে আর ২০২৪ সালে আমাদের সন্তানেরা এবং
নাতি-নাতনিরা যুদ্ধ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে অহংকারী ও দাম্ভিক
স্বৈরশাসককে হটাবার উদ্দেশ্যে।
২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
যারা, তাদের সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ পদক্ষেপের বাস্তব সত্য ঘটনাগুলোই
আমার জ্যেষ্ঠ কন্যা তাহেরা আখতার চৌধুরী সোমার লেখা গল্পগুলোর
মূল উপজীব্য। স্বৈরাচারী সরকার পতন পরবর্তী সময়ে আন্দোলনে আহত
গানশট রোগীদের জন্য সোমা বারে বারে ছুটে গেছে হাসপাতালে এবং
আহতদের মানসিক শক্তি উদ্দীপ্ত করার জন্য সে চেষ্টা করে গেছে
অবিরত। তার এই প্রচেষ্টা সন্দেহাতীতভাবে আন্তরিক, যা তার মধ্যকার
প্রকৃত দেশপ্রেমকে উজ্জীবিত করেছে। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার
সন্তানের কাছ থেকে এই প্রত্যাশা অমূলক নয়। পরিশেষে, সোমার লেখা
গল্পগ্রন্থ ‘রক্তাক্ত জুলাইয়ের বীরগাথা’র পাঠকপ্রিয়তা কামনা করছি। আমি
বিশ্বাস করি, সোমার লেখা গল্পগুলো ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী
ছাত্রজনতার আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে পাঠকের অন্তরের
অন্তঃস্থলে জায়গা করে নিবে। সবার জন্য শুভকামনা।
ধন্যবাদান্তে
হামিদা আলম
প্রাক্তন অধ্যক্ষ
নতুন কুঁড়ি প্রিক্যাডেট স্কুল।
তারিখ: ২৯/০১/২০২৫
Sorry, the comment form is closed at this time.